![]() |
| বেস আইসোলেশন ভূমিকম্পের দেশেও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার প্রযুক্তি |
বেস আইসোলেশন ভূমিকম্পের দেশেও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার প্রযুক্তি
২০১১ সালে জাপানে যখন ৯.১ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে, তখন পৃথিবীর বুকে এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য দেখা যায়।
টোকিওর রাস্তায় গাড়ি চলছিল, হাসপাতালে অপারেশন থেমে যায়নি, অফিসের ভেতরে কাচের গ্লাসও ভাঙেনি।
কারণ একটাই বেস আইসোলেশন।
বেস আইসোলেশন কী?
সহজ কথায়, ভবনকে সরাসরি মাটির সাথে শক্ত করে আটকে না রেখে নিচে বসানো হয় বিশেষ রাবার-লেড বেয়ারিং।
মাটি যত তীব্র কাঁপে, ভবন সেটা পুরোপুরি অনুসরণ করে না—
বরং ভবন ধীরে, নিয়ন্ত্রিতভাবে দোলে।
ফলাফল
✓ ভবনের ক্ষতি কম
✓ মানুষের প্রাণ রক্ষা
✓ হাসপাতাল, ডেটা সেন্টার, স্কুল—সবই নিরাপদ
জাপান আজ পৃথিবীর সবচেয়ে ভূমিকম্প-সহনশীল দেশ শুধু এই প্রযুক্তির কারণে।
নতুন ভবন তো বটেই, ৪০–৫০ বছরের পুরোনো বিল্ডিংও কাটাকাটি করে বেস আইসোলেশন বসিয়ে নতুন জীবন দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশও এগিয়ে আসছে
আমাদের দেশ ভূমিকম্পপ্রবণ। ঢাকা, চট্টগ্রাম এলাকা উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে।
তাই BNBC-2020 অনুযায়ী এখন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে।
যেমন
• রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট
• মেট্রোরেলের কিছু স্টেশন
• আধুনিক অফিস টাওয়ার
• গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা
এটা বিলাসিতা নয়
এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার অংশ।
কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ?
কারণ একটাই: ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা।
একটি প্রযুক্তি জীবন বাঁচাতে পারে, অর্থনীতি রক্ষা করতে পারে, দেশের উন্নয়ন থেমে যেতে দেয় না।
জাপান আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে
দুর্যোগ আসবেই, কিন্তু ক্ষতি কমানো আমাদের হাতেই।
প্রতিটি দেশের উন্নতির পেছনে থাকে সাহসী সিদ্ধান্ত এবং সঠিক প্রযুক্তির ব্যবহার।
যদি আমরা আজ সঠিক নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণ করি, আগামী প্রজন্ম নিরাপদ থাকবে।
দুর্ঘটনা থেকে শিখতে নয়
উন্নত দেশগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে আগেই প্রস্তুত হওয়া এটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ভূমিকম্পকে থামানো সম্ভব নয়,
কিন্তু প্রযুক্তি দিয়ে ক্ষতি থামানো সম্ভব।
আমাদের শুধু ইচ্ছা আর দায়িত্ববোধ থাকতে হবে।
